মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন ও উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ওমান সাগরে যৌথ মহড়া চালিয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। দীর্ঘদিনের শত্রুতা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন থাকার পর, এ দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ঐক্য গড়ে উঠেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের দিকে ধাবিত করছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) এএফপির বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, সৌদি আরব ও ইরান সম্প্রতি ওমান সাগরে সফল একটি যৌথ নৌ-মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ মহড়া দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সৌদি আরব ও ইরানের এ ঐক্য ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
সৌদি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুর্কি আল-মালকি মহড়া বিষয়ে বলেন, রাজকীয় সৌদি নৌবাহিনী সম্প্রতি ওমান সাগরে ইরান ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে একটি যৌথ নৌ-মহড়া শেষ করেছে।
মহড়াটি শুরু হয় যখন ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ জানায়, দুই দেশ লোহিত সাগরে যৌথ সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করছে। তখন ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি জানান, সৌদি আরব আমাদের লোহিত সাগরে যৌথ মহড়ার আয়োজন করতে বলেছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরব ও ইরান দীর্ঘদিন ধরেই শিয়া-সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ২০১৬ সালে সৌদি আরবের হাতে একজন শিয়া ধর্মগুরুর মৃত্যুদণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভেঙে যায়। তবে গত বছর গাজার গণহত্যার প্রেক্ষাপটে চীনের মধ্যস্থতায় তারা আবার সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসন বৃদ্ধি পেলে সৌদি আরব ও ইরানের এ নতুন সম্পর্ক আরও জোরালো হতে পারে। চলতি মাসের শুরুতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রিয়াদ সফর করেন এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এই পরিবর্তনের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক সমীকরণে নতুন দিকনির্দেশনা আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদি আরব ও ইরানের ঐক্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে, যা উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রধান শক্তির মধ্যে গড়ে ওঠা এ নতুন ঐক্য সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ, যা ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
এসসি//