রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ঢাকা উদ্যান এলাকায় ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় রবিউল ইসলাম (৩৫) নামে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে ছিনতাইকারীরা।
বৃহস্পতিবার(১০ অক্টোবর)রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে।পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে রাত সাড়ে বারোটার দিকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের বোন নুরবানু জানান, আমার ভাই মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যানে নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করে।বুধবারে রাতে মোবাইল ছিনতাই করার সময় সিকিউরিটি গার্ড রবিউল ওই ছিনতাইকারীকে তাড়া করে।এই নিয়ে গতরাতে ওই ছিনতাইকারী নিরাপত্তা কর্মী রবিউলের সঙ্গে দেখা হলে বলে বন্ধু কেমন আছো এই বলে আমার ভাইয়ের বুকে পিঠে হাতে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।পরে আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক জানায় আমার ভাই আর বেচে নেই।
তিনি আরো জানান, আমাদের বাড়ি নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানার বালাগ্রামে।বর্তমানে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান দুই নম্বর রোড ব্লকের একটি বাসায় থাকতেন। নিহতের এক ছেলে এক মেয়ের জনক ছিলেন।
সরজমিনে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান হাউজিং, নবীনগর হাউসিং,একতা হাউসিং ও তুরাগ হাউজিং এলাকায় দিনে দুপুরে ও রাতে ধারালো অস্ত্র ধরে টাকা পয়সা মোবাইল ছিনতাইয়ে ঘটনা ঘটে। তারা ওপেন এই ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরলেও ভয় কেউ মুখ খুলতে চায় না। এটা প্রতিদিনকার ঘটনা। এই এলাকায় হিন্দু বিজয়,কালিয়া,ডিবজল, বুলেট,বাবুসহ একাধিক ছিনতাইকারী গ্রুপ রয়েছে।ঢাকা উদ্যান ৫ রোডের ডি-ব্লকের সাবেক রেলমন্ত্রী বাসার সামনে তারা সব সময় আড্ডা দেয় এবং এই বাসার সামনে একটি টিনশেড বাড়ি আছে এর মধ্যেই তারা ধারালো অস্ত্র সংরক্ষণ করে রাখে ও এই বাসাতেই থাকে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে এবং পুলিশের কোন পেট্রোলিং বা পুলিশকে এলাকায় দেখা যায় না। আগে তারা এসব ঘটনা ঘটালেও তারা গোপনে থাকতো কিন্তু এখন তারা সব সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সবার সামনে দিয়ে ঘুরে। জীবননাশের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
নিরাপত্তা কর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান। তিনি বলেন, রাত্রে নয় টার দিকে ঢাকা উদ্যান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে পড়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনার পরিবারে পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। ঘটনা তদন্তে আমাদের অফিসাররা কাজ করছে। ঘটনায় যারা চরিত্র তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
এসসি//