পল্টন মডেল থানার বিএনপি কর্মী মকবুল হত্যা মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ৫ দিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীরকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাচান। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড আদেশ মঞ্জুর করেন।
আবেদনে বলা হয়, মকবুল হত্যার সঙ্গে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ সময় আসামিপক্ষে আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন ও মো. আবু সুফিয়ানসহ একাধিক আইনজীবী রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিন আবেদন করে শুনানি করে। তারা বলেন, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সিটিজেন এবং একজন হৃদরোগী। এমনকি তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি এই মামলার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন।
অন্যদিকে, জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির সর্বোচ্চ রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সরকার প্রধান শেখ হাসিনার পদলেহনকারী সচিব ছিলেন। স্বৈরাচার সরকারকে খুশি করায় শেখ হাসিনা তাকে এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। উবায়দুল মোকতাদিরও শেখ হাসিনাকে খুশি রাখতে পূর্বাচলে শেখ পরিবারের সবার নামে ইচ্ছা মতো প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। গণপূর্তের মতো একটি লোভনীয় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে তিনি প্লট বাণিজ্য ও লুটপাটের বরপুত্র হয়ে আবির্ভূত হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘিরে নেতাকর্মীরা রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হতে থাকলে মামলার আসামিরা সমাবেশ বানচালের চক্রান্ত করে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমারসহ অন্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যোগসাজশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আন্দোলন দমন করতে নির্বিচারে লাঠিচার্জ, ককটেল হামলা, টিয়ারসেল নিক্ষেপ, সাউন্ড-গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করা হয়।
এতে বিএনপির কয়েকশো নেতাকর্মী আহত হন এবং মকবুল হোসেন নামক এক বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এ মামলার ৩৫ নং এজাহারনামীয় আসামি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
এসসি//