বিদ্রোহীদের অস্ত্র রেখে রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সামরিক জান্তা। তবে বিদ্রোহীরা এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ক্ষমতায় থাকা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর আহ্বানের কথা শুক্রবার এক প্রতিবেদেন জানিয়েছে আল জাজিরা।
মিয়ানামারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)–কে ‘সন্ত্রাসবাদী পথ’ হিসেবে বর্ণনা করা পথ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। রাজনৈতিক সংলাপ শুরুরও আহ্বান জানানো হয়েছে তাদের পক্ষে।
প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের অক্টোবরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দেশের বিভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওই সময় থেকেই সেনাবাহিনী প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়ে যায়। কোনো কোনো এলাকায় বিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যান সেনাবাহিনী।
রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমারের শুক্রবারের সংস্করণে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসএসি বলেছে, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন এবং পিডিএফ সন্ত্রাসীদেরকে দলীয় রাজনীতি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ পরিত্যাগ করে টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের ওপর জোর দিতে জনগণের সাথে হাত মেলাতে যেন তারা সক্ষম হয়, এ লক্ষ্যেই এই আহ্বান।
’তবে এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে সেনা অভ্যুত্থানে অপসারিত আইনপ্রণেতাদের অংশগ্রহণে গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)। এনইউজির মুখপাত্র নে ফোন ল্যাট বলেছেন, এটি বিবেচনার মতো কিছু নয়।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তাকারী একটি মনিটরিং গ্রুপ বলছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনী কমপক্ষে ৫৭০৬ জনকে হত্যা করেছে। আটক করা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার জনকে।জাতিসংঘের তদন্তকারীরা গত মাসে বলেছিলেন, সেনাবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে মিয়ানমারে।
এদিকে জেনারেলরা নতুন নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকার নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে ১ অক্টোবর থেকে আদমশুমারি শুরু হবে। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সতর্ক করে বলেছেন, এসএসির একটি ফাঁদ হলো নির্বাচন। অভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট সংকটের কোনো সমাধান এতে আসবে না।
এসসি//