রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগীদের শাস্তি দাবি জানিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। আজ রবিবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
গ্রেপ্তার সুমন মিয়ার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান,তার স্বামী মো. সুমন মিয়াকে পিচ্চি হেলাল ক্ষমতা দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়ে নির্যাতন করাচ্ছে। তার স্বামীর মুক্তিসহ পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগীদের হাত থেকে মোহাম্মদপুরবাসীদের বাঁচানোর দাবি জানান ফেরদৌস।
জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন,মোহাম্মদপুরের একটি জমিকে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর বিভিন্ন সময় হামলা করে। আমার স্বামীকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। বেশ কয়েকবার আমার বাড়িতে ভাঙচুর ও ডাকাতি করেছে।যার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আমার কাছে আছে।
গত সরকারের আমলে বিএনপির কর্মী হওয়ায় বেশ কিছু মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে হয়রানি করা হয়। এখন পিচ্চি হেলালের সহযোগী জাহিদ মোড়ল লালমাটিয়া থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত জমি দখল, ছিনতাই, ফুটপাতে চাঁদাবাজি ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে।
মান্নান হোসেন শাহীন মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদ উদ্যানসহ বছিলা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে, কেউ প্রতিবাদ জানালে তাকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় এবং মোটা অঙ্কের টাকা হাতানো হয়।
তিনি আরো জানান,পিচ্চি হেলালের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলে নাম শুনেই পুলিশ জিডি নেয়নি।
অজানা কারণে আমাদের অপমান করে বের করে দেয়। এখন আমার দুই বাচ্চাসহ আমার পরিবারের হেফাজতের দায়িত্ব কে নেবে? আমরা কি স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারব না?
গত ২০ নভেম্বর আমার স্বামী জমির ব্যাপারে সাক্ষী দিতে আদালতে যায়।সেখান থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের সহযোগীরা অবৈধ ক্ষমতাবলে আমার স্বামী মো.সুমন মিয়াকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করায়। আদালতের মৌখিক নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশ।
আমার স্বামীর মামলার তদন্ত অফিসার এসআই আব্দুল কাদির, তবে ওনার চেয়ে (টাকা খেয়ে) বেশি টর্চার করছে এসআই আলতাব।
তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদের জানায়, আমরা ডিসি স্যারের নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদ করতেছি। এ ব্যাপারে আমরা ডিসি সাহেবের শরণাপন্ন হলে ডিসি সাহেব আমাদের বলেন, আদালত নাকি সুমনকে ২৪ ঘণ্টা করে ছয় দিনই পেটাতে বলেছে। মোহাম্মদপুরে শুধু আমরাই নই, শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ। বিগত সরকারের আমলে মোহাম্মদপুরে আর যা-ই হোক-ছিনতাই, ডাকাতির কোনো নামগন্ধই ছিল না। কিন্তু বর্তমানে মোহাম্মদপুর ছিনতাই ও ডাকাতিতে রেকর্ড করেছে। যার মূল হোতা এই পিচ্চি হেলাল বাহিনী।
এই সন্ত্রাসী বাহিনীর জমি দখল,খুন,ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে মোহাম্মদপুরবাসী নাজেহাল।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর আমার স্বামীর নামে এই বিষয়ে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়। যার মাঝে আমার স্বামী কোনোভাবেই জড়িত ছিল না।
তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদপুরবাসীকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের কালো হাত ও মামলা বাণিজ্য থেকে রক্ষা করুন। আমি আমার স্বামীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও তার সহযোগী মফিজুল ইসলাম মফি, দীপু, বাবু, জাহিদ মোড়ল, মান্নানসহ সব সন্ত্রাসীর শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জেল থেকে বেরিয়ে তার অপরাধ সাম্রাজ্য আবারও নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে। মোহাম্মদপুরে সে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছে।জেল থেকে বের হওয়ার পর জোড়া মার্ডারে সম্পৃক্ততা পায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এসসি//