এ বছরও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু দুটোই সমানতালে বাড়ছে। চলতি বছরের নয় মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৬৩ জনের। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরেই মারা গেছেন ৮০ জন। আর আগস্টের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তিন গুণ।
এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়। ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ জ্বর। এর সঙ্গে দেখা দিতে পারে বমি, জ্বর, মাথা ও মাংশপেশিতে ব্যথা। এ ছাড়া শরীরের নানা স্থানে র্যাশ ওঠাই ডেঙ্গুর লক্ষণ। এডিস মশার কামড়ে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয় ডেঙ্গু জ্বর।
ডেঙ্গু জ্বরে ডায়াবেটিস রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন। এতে ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক জটিলতা বাড়তে পারে। তাই এ সময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত গ্লুকোজের কারণে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়, ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। যাঁদের ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ ভালো নয়, তারা ডেঙ্গু জ্বরে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবার ডায়াবেটিস রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বর আর ডায়াবেটিস এই দুটো রোগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা মেনে চলা প্রয়োজন। এ সময় ডায়াবেটিস রোগীরা পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন। শরীরে পানি কমে গেলে ডিহাইড্রেশন হয়। ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
করণীয়
১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।২. রক্তের প্ল্যাটিলেট নিয়ে বেশি চিন্তা করবেন না।৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।৪. রাতের পাশাপাশি দিনের বেলায়ও মশারির নিচে ঘুমান।৫. ডায়াবেটিসের কারণে চিনি ছাড়া ওরস্যালাইন, লেবু পানি, সুপ পান করুন।৬. রক্তের শর্করার মাত্রা কয়েকঘন্টা পর পর পরীক্ষা করুন।৭. আপনার খাদ্যে চর্বিহীন প্রোটিনযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।৮. ভাজাপোড়া এবং উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। কারণ এসব খাবার রক্তে শর্করার বৃদ্ধি করে।৯. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা নির্ধারণ করে ।
মাসুমা চৌধুরী আরও বলেন, এ সময় রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখার জন্য কম গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার বেছে নিতে হবে। এই খাবারগুলো ধীরে ধীরে রক্তপ্রবাহে গ্লুকোজ ছেড়ে দেবে। উদাহরণের মধ্যে রয়েছে গোটা শস্য, শিম বা মটরজাতীয় সবজি, সবুজ শাক ও বাদাম। ডেঙ্গু রোগীদের চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এসসি//