ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লার উপপ্রধান শেখ নাঈম কাসেম। সোমবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ভাষণে শেখ নাঈম বলেন, “ইসরায়েলের সেনাবাহিনী যদি স্থালভাগ দিয়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে আমরা তাদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।”
“সেই পেজার বিস্ফোরণ থেকে শুরু…তারপর থেকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে আমাদের সেক্রেটারিসহ একের পর এক কমান্ডারকে শাহাদাৎ বরণ করতে হয়েছে। হামলার তীব্রতা আমাদের সেনারা, লেবাননের সাধারণ জনগণকে কাঁপিয়ে দিয়েছে।”
কিন্তু যা কিছু হোক, আমরা লেবানন এবং এই দেশের জনগণকে রক্ষা করব। গাজা এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতিও আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আমাদের যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেসব সঙ্গে নিয়েই আমাদের অগ্রসর হতে হবে। আমাদের শহীদ নেতা নাসরুল্লা যেসব নির্দেশনা আমাদের দিয়ে গেছেন যেসব স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দিয়েছেন—সেগুলোর প্রতিটি বাস্তবায়ন করা হবে।”
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণটি কোথায় এটি ধারণ করা হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। শেখ নাঈম কোথায় অবস্থান করছেন, তা ও এখনও অজানা।
ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি শাসকগোষ্ঠীর সরাসরি মদত ও তত্ত্বাবধানে ১৯৮৫ সালে লেবাননে আত্মপ্রকাশ করে হিজবুল্লা। লেবাননের রাজনীতিতে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও আড়াল থেকে দেশটির জাতীয় ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে গোষ্ঠীটি। জন্মলগ্ন থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের পক্ষে।
গোষ্ঠীটির সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ হিজবুল্লার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। ১৯৯২ সালে গোষ্ঠীটির জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হন তিনি। শনিবার দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লার সদর দপ্তরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ছোড়া বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রে নিহত হন নাসরুল্লাহ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরু করলে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লা। জবাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও সেসবের জবাব দেওয়া শুরু করে। উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় গত ১১ মাসে নিহত হয়েছেন শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষ।
তবে গত সপ্তাহ থেকে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নাসরুল্লাহ ছাড়াও নিহত হয়েছেন গোষ্ঠীটির কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার।
ইসলামিক বক্তা ও স্কলার হিসেবে পরিচিত শেখ নাঈম কাসেমও হিজবুল্লার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, তিনিই হতে যাচ্ছেন গোষ্ঠীটির পরবর্তী প্রধান নেতা।
সূত্র : সিএনএন
এসসি//